33 C
dhaka
মঙ্গলবার, ৩০শে মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | রাত ১১:১৩
দৈনিক স্বদেশ বিচিত্রা

স্বজন হারা মায়েদের ঠিকানা আপন ভুবন বৃদ্ধাশ্রম 

আর কে রুবেলঃ
জানালা দিয়ে তাকিয়ে আছে মা কখন আসবে ছেলে। মাস পেরিয়ে বছর হল তবুও ছেলে নাহি আসে মায়ের কাছে। তবুও মা যেন তাকিয়ে আছে ছেলের অপেক্ষায় কখন আসবে ছেলে। 
(( ছেলে আমার মস্ত মানুষ মস্ত অফিসার মস্ত ফ্লাটে যায়না দেখা এপার ওপার। নানা রকম জিনিস আসবাব দামি দামি সবচেয়ে কম দামি ছিলাম একমাত্র আমি। ))
এবার  স্বজন   হারা মায়েদের করুন কাহিনী জানতে হাজির হলাম রাজধানীর ঢাকা উত্তরায় আপন ভুবন বৃদ্ধাশ্রমে রুমি রহমানের কাছে। এই শহরে  যারা অসহায়, আশ্রয়হীন, পরিবার থেকে  বিচ্ছিন্ন এবং সুবিধাবঞ্চিত- এমন মাকে খুঁজে     আপন ভুবন বৃদ্ধাশ্রম। সবকিছু জানার পর ওই মা আগ্রহী হলে যত্নসহকারে নিয়ে যান ‘আপন ভুবনে’। পরম শ্রদ্ধা, আদর আর ভালোবাসায় বরণ করে নেন ‘আপন ভুবন’। এটা কোনো সিনেমা বা নাটক নয়   এটা জাদুর শহর ঢাকার সোনার বাংলাদেশের  বাস্তব ঘটনা। বলছিলাম ‘আপন ভুবন’ বৃদ্ধাশ্রমের স্বেচ্ছাসেবক দের কথা।
 গত কয়েক বছর দরে দিন রাত বিরামহীন রাজধানীর পথে পথে ঘুরে বিভিন্ন এলাকা থেকে অসহায়, দুস্থ, মায়েদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছেন এই স্বেচ্ছাসেবক দল। এইসব মায়েদের ঠিকানা এখন ‘আপন ভুবন। 
রাজধানীর উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশের ২০ নম্বর রোডস্থ ৩৬ নম্বর হাউজে ‘আপন ভুবন’ বৃদ্ধাশ্রমে থেকে  বলেছেন একটা বেসরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত ভাইস প্রিন্সিপাল এবং ‘আপন ভুবন ট্রাস্ট’-এর সাধারণ সম্পাদক রুমি রহমান।

জীবনসায়াহ্নে আসা এই অসহায় বৃদ্ধ মায়েদের মুখে হাসি ফোটাতে ও নিশ্চিন্ত আনন্দময় নবজীবন দিতে ‘আপন ভুবন’- এর মতো বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠার মহতি উদ্যোগের কথা চিন্তা করেছেন, তাদের মধ্যে প্রধান উদ্যোক্তা হলেন রুমি রহমান। কথায় কথায় তিনি জানালেন বৃদ্ধাশ্রমের শুরুর গল্প।২০১৬ সাল। মানুষের জন্য কল্যাণমূলক কিছু করার ইচ্ছে জাগে মনে। নিজের ইচ্ছের কথা কয়েকজন শুভাকাঙ্ক্ষীর সাথে শেয়ার করলাম, আমার সাথে যুক্ত হন আরো চারজন।

তিনি বলেন, আমরা সবাই বিভিন্ন পেশার মানুষ। মূলত, মনের প্রশান্তির জন্য নিজেদের টাকায় এ সেবামূলক কাজ করার উদ্যোগ নেই। শুরুতে রাজধানীর উত্তরাসহ কয়েকটা বস্তিতে অভুক্ত অসহায়দের খাবার ও চিকিৎসাসেবা দেয়া শুরু করি। সবাই চাকুরির শেষে হওয়াতে ছুটির দিনে বা অফিস শেষে এসব করতাম। কখনো নিজেরা রান্না করে নিয়ে যেতাম। কখনোবা হোটেল থেকে প্যাকেট খাবার কিনে দিতাম। নিজেদের পরিচিত, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে যারা চিকিৎসক ছিলেন, তাদেরকে চুক্তি করে নিয়ে যেতাম বস্তিবাসীর চিকিৎসা সেবা দিতে। এভাবে কয়েক বছর চলতে থাকে আমাদের সেবা কার্যক্রম। কিন্তু এতে খুব শান্তি পাচ্ছিলাম না।
কী করলে মিলবে প্রশান্তি? রুমি চিন্তা করতে থাকেন। তার মা মারা গেছেন অনেক আগে। হঠাৎ মনে হলো, দয়া-মায়াহীন ইট-পাথরের এই শহরে যে সকল মায়েদের পৃথিবীতে কেউ নেই, অসহায়, বয়সের ভারে ন্যুব্জ, যাওয়ার কোনো জায়গা নেই, যারা পরিবারের আপনজনদের কাছে থেকে নানাভাবে অত্যাচারিত ও বিতাড়িত হয়ে পথে পথে আশ্রয়হীন অসহায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন, তাদের জন্য কিছু করলে কেমন হয়? নিজের ভাবনাটা শেয়ার করেন বাকিদের কাছে। সবাই একমত পোষণ করেন। তখন তারা পরিকল্পনা করেন মায়েদের জন্য বৃদ্ধাশ্রমের। সবাই মিলে নাম দেন ‘আপন ভুবন’ বৃদ্ধাশ্রম।

রুমি বলেন, পরিকল্পনা অনুসারে সবাই স্বপ্ন বাস্তবায়নে নেমে পড়ি। যেহেতু শূন্য থেকে শুরু তাই একেকজন একেক দায়িত্ব ভাগ করে নেই। মায়েদের ভালোভাবে থাকার জন্য সুন্দর, মনোরম পরিবেশে ফ্লাট ভাড়া নেই। ফ্লাটের বারান্দা, ব্যালকনি আছে। সব রুমে এসির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

পাশে হাঁটাহাঁটির জন্য পার্ক। টিম করে রাতের রাজধানীতে বৃদ্ধা মায়েদের খোঁজা শুরু করি। প্রথম মাসে তিনজন মাকে নিয়ে আমরা এই স্বপ্নের যাত্রা শুরু করি। আস্তে আস্তে মায়েদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তখন তাদের জন্য সব ব্যবস্থা ও জায়গাও বড় করতে থাকি। এখন ২৩ জন মা আছেন। মায়েদের খুঁজতে গিয়ে পথে দুজন কিশোরীরও দেখা মেলে। একজন বুদ্ধি ও অন্যজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাদের কোনো ঠিকানা না থাকায় এখানে মায়েদের সাথে রাখা হয়েছে। সুস্থ করে তোলার জন্য তাদেরকে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আপন ভুবনে যারা থাকেন তাদের একজন মিলন বেগম। বয়স ৮০ বছর। তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হতো। ৮৭ বছর বয়সী তিতলী মা। তাকে পরিবার থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। ৬০ বছর বয়সী বিবি আছিয়া। মানসিকভাবে অপ্রকৃতস্থ। কিছুই মনে করতে পারেন না। জন্মগত বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বরগুনার বৃদ্ধা আনোয়ারা বেগম। তারও একই অবস্থা। সিরাজগঞ্জের রাবেয়া বেগম। জন্মের সময়ই যাকে সবার চোখের আড়ালে ঘরের পিছনে মাটিতে পুঁতে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিলো। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার পাগলী মাসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অন্যান্য মায়েরাও রয়েছেন এখানে। এরা সবাই এখন ‘আপন ভুবন’ বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দা। এখানে ৬৫ থেকে ১০০ বছরের বয়স্ক মাও আছেন।

কথায় কথায় জানা গেলো অসহায় মায়েদের জীবনের গল্প। এখানে কেউ আছেন যিনি অকালে সন্তান হারিয়েছেন। কেউবা স্বামীর ভিটা বাড়ি, আশ্রয় সব হারিয়ে পথে পথে ভিক্ষা করে মানবেতর জীবনযাপন করতেন। কেউ শুয়ে থাকতেন রাস্তার ধারে, ফুটপাতে অথবা কোনো নর্দমার পাশে। কেউ আবার ফুটপাথে অসুস্থ শরীর নিয়ে নির্বাক চোখে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে অপেক্ষায় করতেন জীবনের শেষ মুহূর্তের।কোনো দিন হয়তো একবেলাও খাবার পর্যন্ত জুটতো না কারো কপালে। তাদের কারো কারো শারীরিক সামর্থ্য নেই। সমাজের এই সুবিধাবঞ্চিত, নিপীড়িত, অবহেলিত মায়েদের সম্পূর্ণ ভরণপোষণ, চিকিৎসা এবং নিরাপদ আশ্রয় দিচ্ছে ‘আপন ভুবন’।রুমি বলেন, ‘আপন ভুবন’ শতভাগ সেবামূলক ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এখানে বিনামূল্যে অসহায় বৃদ্ধ মায়েদের বাসস্থান, খাবার এবং চিকিৎসা, বিনোদনসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কয়েক বছর ধরে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির সদস্যরা। এটি পরিচালিত হয় একদল অবৈতনিক স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে। মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এখানে তারা বিনা পারিশ্রমিকে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন।
আপন ভুবনে তিনবেলা সুষম ও পুষ্টিকর খাবার এবং দুইবেলার নাস্তার ব্যবস্থা আছে। বৃদ্ধা মায়েদের বয়সানুসারে প্রতিদিনকার খাবারের মেনু ঠিক করা হয়। যারা শারীরিকভাবে অসুস্থ তাদেরকে সপ্তাহে একদিন ডাক্তার এসে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। বৃদ্ধাদের নাজুক শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে একজন ফিজিওথেরাপিস্ট নিয়মিত সেবা দিচ্ছেন। সন্তান তার বাবা-মাকে যেভাবে আগলে রাখেন, এই প্রতিষ্ঠানটিও সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছে আপনজনের মতো তাদেরকে আগলে রাখতে।

এতোগুলো মা একসাথে থাকেন কোনো সমস্যা হয় না? রুমি বলেন, সবাই ভিন্ন পরিবার, পরিবেশ থেকে এসেছেন। সবার আচরণই ভিন্ন। যারা পুরানো তারা নতুন কেউ আসলে সহজে গ্রহণ করতে চান না। পুরানোদের ধারণা বাড়িটা তাদের নিজের। অন্য কেউ এখানে আসতে পারবে না। তাই পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়াতে অনেক সময় লাগে। আবার যারা মানসিক ভাবে অসুস্থ। তারা প্রায়ই টিভির রিমোট নিয়ে, লুডু খেলতে গিয়ে, খাবারের টেবিলে নানান অশোভন আচরণ করেন। একজন মা আছেন। তার স্মৃতি মুছে গেছে। কিছুই মনে করতে পারেন না। 

এমন মায়েদের দেখাভাল করার জন্য সবসময় একজনকে রাখলেই তো সমাধান। রুমি বলেন, দেখেন আমরা চেয়েছিলাম মাত্র কয়েকজনকে এই ‘আপন ভুবনে’ রেখে নিজের মায়ের মতো করে সেবা দিবো। কোনরকমে তিনবেলা ডাল ভাত খাইয়ে তাদের রাখবো এমনটা কখনো ভাবিনি। আমাদের সামর্থ্য অনুসারে মায়েদের সর্বোচ্চ ভালো মানের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। এখানে একেকজন মা একেক রকম। কেউ শারীরিকভাবে অসুস্থ। কেউ মানসিক প্রতিবন্ধী। এখন এসব মায়েদের দেখভাল করার জন্য স্বেচ্ছাসেবীরা আছেন। এর বাইরেও ২৪ ঘণ্টা দেখাশোনার জন্য সহযোগী নারীদের রেখেছি। অন্যদিকে, বাজারে সবকিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী। প্রতিদিনের খাবার, এসব ব্যবস্থাপনা, সেবাদানকারী সহযোগী, বাবুর্চির বেতন, চিকিৎসাসেবা, ফ্লাট ভাড়াসহ সব মিলে প্রতিমাসে সোয়া ৪ লাখ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা খরচ হয়ে যায়। এটা আমাদের পক্ষে কুলিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমরা দাতা খুঁজছি
সমাজের সামর্থ্যবান ও বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রুমি বলেন, অসহায় মায়েদের সহযোগিতা করার জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার সবিনয় অনুরোধ করছি। আপনার এককালীন অনুদান এই অসহায় বৃদ্ধ মায়েদের সেবা করার সুযোগ করে দিবে। আপনার আন্তরিক অংশগ্রহণ একজন পরিবার, স্বামী, সন্তানহীন মায়ের ব্যথিত মনে প্রশান্তি এনে দিতে পারে। আপনাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খাবার পাঠাতে পারেন, পোশাক দিতে পারেন, প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র দান করেও এই অসহায় মায়েদের পাশে দাঁড়াতে পারেন। তিনি আরো বলেন সবাই আমাদের পাশে এসে দাঁড়ালে আমরা কৃতজ্ঞতা থাকবো।

বৃদ্ধ মাতাপিতা এক সময় ছিলেন নিজের ঘর-পরিবারের নির্মাতা, সংসার সমাজের প্রতিষ্ঠাতা। অথচ কালের বিবর্তনে কিছু সংখ্যক হয়েছেন অকর্মণ্য, নিজের ঘরে পরগাছা, সন্তানের চক্ষুশূল এবং পরিবার ও সমাজের বোঝাস্বরূপ। তারা নিজেরা যেমন অলস অকেজো হয়ে পড়েছেন, তেমনি তাদের সন্তানরাও পড়েছে মহা বিপদে।
বৃদ্ধ মানুষদের ভরণ-পোষণের কারণে জীবিকা নির্বাহে যেমন বাধা সৃষ্টি হয়, তেমনি বৃদ্ধরাও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যা পান না। অথৈ জলে ভাসমান কচুরিপানার মতো দুর্বিষহ অবস্থা বহে চলে তাদের উপর দিয়ে। শেষ পর্যন্ত তারা তাদের নিজেদের হাতে গড়া পরিবার বা সংসারে হয়ে পড়েন এক প্রকার বন্দি আবর্জনাস্বরূপ।
 বর্তমান সমাজ-সংসারে দেখা গেছে, বৃদ্ধগণের প্রতিপালনের ক্ষেত্রে ছেলে-সন্তানদের ঘর-সংসারে লেগে থাকে ভুল বোঝাবুঝি ও ঝগড়া-বিবাদ। ছেলের বউ তার শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রহণ করতে পারে না নিজের মা-বাবার মতো। অনেক ক্ষেত্রে ছেলেরাও হাঁপিয়ে ওঠে নিজেদের জীবিকার কর্মব্যস্ততায়। নিজের স্ত্রী-সন্তানদের ভরণ-পোষণ করতেই বেচারা ছেলের দিনরাত একাকার। উপরন্তু বৃদ্ধ পিতা-মাতার পরিচর্যা আরেকটি বাড়তি ঝামেলা। 
মেয়ে-সন্তানেরা বৃদ্ধ পিতা-মাতার দায়-দায়িত্ব বহন করতে পারে না বিভিন্ন কারণে। একে তো নিজের সন্তানের লালন-পালন, স্বামীর সংসারের কর্মব্যস্ততা এবং সমাজ-সংস্কৃতিতে কিছুটা বেমানান ইত্যাদি কারণে অধিকাংশ বৃদ্ধ পিতা-মাতা মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার।

বৃদ্ধাশ্রম নিয়ে নতুন আইন আনছে আসামছেলেমেয়ে বেঁচে থাকলে মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রাখা চলবে না- এমনই আইন করতে যাচ্ছে ভারতের আসাম রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেছেন, ‘রাজ্যে ক্রমেই বাড়ছে বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা। এটি শুভ ইঙ্গিত নয়।’
দেশটির সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রীর ভাষ্য, ‘ছেলেমেয়েরা যত বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকবে, ততই সংস্কার শিখবে। বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর সংস্কৃতি চালু হলে সমাজ ভেঙে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে সব বৃদ্ধ-বৃদ্ধা নিরাশ্রয়, যাঁদের সন্তান নেই, তাঁরাই শুধু বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে পারবেন। কিন্তু ছেলেমেয়ে বাইরে চাকরি করে আর মাসে টাকা পাঠিয়ে বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে দেবে, তেমনটা আসামে চলতে দেওয়া যায় না। এ নিয়ে কড়া আইন আনা হবে।’আসামে সরকার ইতোমধ্যেই আইন করেছে, যে সব সরকারি কর্মী বাবা-মার দেখভাল করবেন না, তাঁদের বেতনের অংশ সরাসরি বৃদ্ধ বাবা-মার অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে।বৃদ্ধাশ্রম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এমন ঘোষণায় অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছে বলে আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়। অনেকের মতে, বয়স্কদের বাড়ি থেকে যেনতেন প্রকারে বের করে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেওয়া, বাবা-মায়ের সম্পত্তি দখল করা, বাবা-মাকে রাস্তায় বের করে দেওয়ার ঘটনা যে ভাবে বাড়ছে-  তাতে এ নিয়ে কড়া আইন তৈরি করা দরকার।
কিন্তু শহরের একটি পুরনো বৃদ্ধাশ্রমের মালিক ওই সংবাদমাধ্যমকে জানান, নিঃসন্তান হলেই কেবল বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে পারবেন, এমন আইন সঙ্গত নয়। অনেক বৃদ্ধ-বৃদ্ধা স্বেচ্ছায়, স্বাধীনভাবে বাঁচার জন্যেও সন্তানের সংসার ছেড়ে বৃদ্ধাশ্রমে থাকা পছন্দ করেন। অনেকের ছেলেমেয়ে বাইরে থাকেন। শহরে তাঁদের পক্ষে একা থাকা, শরীরের যত্ন নেওয়া, বাজার করে সংসার চালানো সম্ভব হয় না। আইন প্রণয়ন করে তাঁদের জোর করে বাড়িতে রাখা অন্যায় হবে।এমন করে  আমাদের দেশের সরকার যদি আইন করার পরিকল্পনা করে তাহলে বৃদ্ধাশ্রমে মায়েদের সংখ্যা কমে আসবে বলে আমরা মনে করি

সাদে/সাবি/সালমা

আরও পড়ুন...

সাঈদ খোকনের সমর্থন পাবেন, আশা তাপসের

অনলাইন ডেস্ক

ডেঙ্গু থেকে মুক্তির উপায় :  সতর্কতা এবং সচেতনতা

ওয়েব ডেস্ক

গরমে খাবারের অরুচি দূর করতে মেনে চলুন সাধারণ কিছু টিপস

ওয়েব ডেস্ক